Wednesday, October 23, 2013

চলনবিল জাদুঘর

দেশের বৃহত্তর বিল চলনবিলের মধ্যস্থলে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর গ্রামে এই জাদুঘরটির অবস্থান । জ্ঞানপিপাসু অধ্যাক্ষ আব্দুল হামিদ ১৯৮৭ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর এই জাদুঘটি প্রতিষ্ঠা করেন । জুদুঘরটি উপজেলা সদর থেকে ৫-৬ কি.মি দুরে আবস্থিত । চলনবিল অঞ্চলের প্রাচীন কীর্তি সম্পর্কে গবেষনা করে লুপ্ত ইতিহাস উদ্ধার; প্রাচীন ঔতিহাসিক ও কৃষ্টিগত নিদর্শন প্রত্নরাজী, শিলালিপি টেরা কোটা ও বিভিন্ন দর্শনীয় বস্তু, মাছ, ঝিনুক, শালুক ইত্যাদির নমুনা সংরক্ষন সহ অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সেতু বন্ধন রচনার অভিপ্রায়ে এই জাদুঘর প্রতিষ্টিত ।
Font_view_of_Chalanbil_Museum
Font View of Chalanbil Meuseum
Credit to NORAD for their Contribution
১৯৮১ সালে সরকারী ভাবে এ জাদুঘরের জন্য পাঁচকাটা জমি দেয়া হয় । ৮৪-৮৫ সালে নরওয়ের দাতা সংস্থা নরওয়ে সরকারের প্রজেক্ট নরওয়ে এজেন্টি (নোরাট) ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুদান দেন ও ৮৫-৮৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে গড়ে তোলা হয় জাদুঘর ভবন । ৯০ সালের ১৫ মার্চ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তরের অধীনে এই জাদুঘড়টি রেজিষ্ট্রি করা হয় । রেজিষ্ট্রি হবার পূর্বে এটি বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় (স্থানিয় ব্যাবস্থাপনায়) চলত । সম্রাট আলমগীর বাদশা নাসির উদ্দিনের হতে লেখা কোরআন শরীফ সহ পুরনো তুলট কাগজে হাতে লেখা তিন চার বছরের ৮ টি সম্পূর্ন  ও আংশিক কোরনআন শরীফ সহ ১৫ টি হাদিস শরীফ এবং বহু সংক্ষক ধর্মগ্রন্থ আছে এই জাদুঘরে ।  গাছের বাকলে লেখা ২ টি সংকৃত পৃঁথি, তিন শতাধিক বছরের পুরনো তুলট কাগজে লেখা বিষহড়ি গ্রন্থ, পূরান, মনসা মঙ্গল সহ আরও অনেক গ্রন্থের পান্ডুলিপি আছে, কষ্টি পাথরের সূর্য দেব, বিষ্ণু ও মার্তৃকা সিৃতি সহ নানা গবেষনা গ্রন্থ ।




 ৯০ টি দেশের মুদ্রা ও অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের বার্তা এ্যড্রেস(এগুলো বর্তমানে আঞ্চলিক জাদুঘরে স্থানান্তরিত) । ডাকটিকেট, ঘট বাংলা অক্ষরের বর্ননাক্রম, বিভিন্ন শাসন আমলের টেরাকোটা, লিলা ও অকরিক, বিভিন্ন গাছের পাতা সহ নানা দুর্লভ বস্তু । বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যের এসব মহামূল্যবান বস্তু যত্নের অভাবে এখন ধংসের মুখে । জাদুঘরের দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এখানে টয়লেট সহ পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা নেই । এবং দ্বিতল ভবনের উপর তলার অবস্থা খুবই শোচনীয় । বিল্ডিং এ ফাটল ধরেছে  এবং মাঝে মাঝে পলেস্টার খসে পড়ছে । এটি সংস্কার করা না হলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের র্দূঘটনায় জীবন ও সম্পদের হানি হতে পারে । মূল্যবান দলিল দস্তাবেজ সংরক্ষনের প্রয়োজনীয় উদ্দোগের অভাবে নষ্ট হতে চলেছে ।
জনগনের দাবী তারা যে প্রত্যশা নিয়ে এটি সরকারের নিকট হস্তান্তর করেছিল সেটি সেই আশ্বাস ও প্রত্যাশার বাস্তবায়ন তার দেখতে চায় । এবং এই আশ্বাসের বাস্তবায়ন হলেই জাদুঘরটি ভবিষ্যৎ প্রজম্মের কাছে হয়ে উঠবে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের একটি প্রান কেন্দ্র । এবং ঐতিহাসিক গবেষনার এক অনন্য প্রান কেন্দ্র ।

Monday, October 21, 2013

চলুন ঘুরে আসি চলনবিল

বাংলাদেশ খুব একটা বড় দেশ নয় যদি ইচ্ছা করেন তাহলে পুরা দেশটাকেই চক্কর মারতে পারবেন খুব সহজেই । তবে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের দেশের প্রতিটি দর্শনিয় স্থান সমন্ধেই জানা উচিৎ । তেমনি বেরানোর মত একটি স্থান হল চলনবিল । নিচের ছবি গুলোর জন্য আমি সম্পূর্ণ ক্রেডিট দেই ফেসবুকের আমাদের নাটোর পেজকে । চলনবিল ভ্রমনের তথ্যের জন্য ছবি গুলোর নিচে লক্ষ করুন ।





আপনি যদি বাংলাদেশের যেকন স্থানে বসবাস করেন এবং চলনবিলে একবারের জন্য হলেও ভ্রমন করতে আগ্রহী হন তাহলে এই পোস্টটি অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করবে । চলনবিলের প্রধান আর্কষণ হল এই বিল সচারচর বাংলাদেশের আর দশটি বিলের মত না । কারন বর্ষা মৌসুমে এই বিলে পানি স্রতের ধারায় প্রবাহিত হয় । সচারচর বিলে স্রোত দেখা যায় না কিন্তু চলনবিলের নামকরনের সাথেই চলন কথাটার একটা সার্থকতা আছে । বর্ষা মৌসুমে বিলের উত্তর পশ্চিম দিক থেকে স্রতের ধারায় পানি বিলের ভেতরে প্রবেশ করে এবং পূর্ব দক্ষিন দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বের হয়ে যায় । চলনবিলের পানি প্রধান উৎস আত্রাই নদী । গ্রীষ্য মৌসুমে ধান চাষের জন্য অত্রাই নদীর পানিকে কৃত্তিমভাবে রাবারড্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে চলনবিলের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত করা হয় এবং যার ফলে হাজার হাজার ধান চাষি উপকৃত হয় নদীর পনি দিয়ে ধান চাষের মাধ্যমে । যাইহোক এবার আসি মুল প্রসংঙ্গে আপনি কিভাবে চলনবিলে আসবেন এবং চলনবিলে এলে দেখার মতই বা কি আছে ? যেহেতু চলনবিল উত্তর বঙ্গের নাটোর সিরাজগঞ্জ এবং পাবনা জেলার মধ্যে আবস্থিত সেইজন্য আপনি যদি সিলেট ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আসতে চান তাহলে আপনাকে আসতে হবে ঢাকা হয়ে, ঢাকা থেকে রাজশাহীর গাড়িতে সিরাজগঞ্জ আথবা নাটোরের কাছিকাটা তে নামবেন । কাছিকাটা দিয়ে যাবার ক্ষেত্রে কাছিকাটা থেকে ৮ কি.মি দুরে চাঁচকৈর বাজার । চাঁচকৈর বাজার থেকে ৫-৬ কি. মি. দুরে চলনবিলের প্রান্ত ঘেষে খুবজীপুর গ্রামে গড়ে উঠা চলনবিল জাদুঘর । আর চলনবিল জাদুঘরের পরেই পাবেন সেই কাংঙ্খিত চলনবিল । আপনি যদি দক্ষিন বঙ্গ থেকে অর্থৎ খুলনা আথবা বরিশাল থেকে আসতে চান তাহলে আপনাকে খুলনা রুট ব্যবহার করে আসতে হবে । খুলনা খেকে ঢাকার গাড়িতে (যে গাড়িগুলা যমুনা ব্রীজ হয়ে যায়) সেই গাড়িতে চরে নামতে হবে একই রুট সেই কাছিকাটা অথবা সিরাজগঞ্জ । তারপরে একইভাবে পৌছে যাবেন চলনবিল জাদুঘরে । তারপর চলনবিল ভ্রমন শুরু । ইচ্ছা করলে আপনি চলনবিল জাদুঘর ভ্রমন করেই চলনবিলের উদ্দেশ্য  বেরতে পারেন । অথবা চলনবিল ভ্রমন শেষে আপনার অভিজ্ঞতা নিয়ে চলনবিল জাদুঘর ভ্রমন করতে পারেন । আসলে চলনবিলতো আনেক বড় যায়গা তাই এক যায়গাতে ঘুরে এর কিছুই দেখা সম্ভব না । তাই আগেই পরিকল্পনা করে নেওয়া ভাল যে আপনি কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন । আপনি বর্ষা মৌসুমে যদি কখনো ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন যমুনা সেতু পার হবার পর থেকে সিরাজগঞ্জ থেকে নাটোর যাবার সংযোগ সরকে আপনি নিশ্চিত ভিন্ন ধরনের এক অনুভতি পাবেন । রাস্তার দুই পাশে নিরব পানির ঝলকানি তাকালে যেন চোখ জুরিয়ে যায় । যখন আপনি চলনবিলের মাঝদিয়ে ভ্রমন করবেন দেখবেন চলনবিলের মাঝে প্রতিটি গ্রামকে মনে হবে এক একটি করে দ্বীপ । বর্ষা মৌসুমে ওই গ্রামগুলাতে যাবার একমাত্র উপায় নৌকা । অন্যরকম এক ভাললাগা কাজ করে বিল ভ্রমনে বের হলে । তবে মনে রাখবেন বিল ভ্রমনে বেরনোর আগে অবশ্যই চারপাশের আবহাওয়ার আবস্থা নিশ্চিৎ হওয়া চাই । কারন বিল দেখতে সুন্দর হলেও বিলের ওই বড় বড় ঢেই গুলো কিন্তু আপনার জীবনকে আসুন্দর পর্যায়ে নিয়েযেতে দ্বিধা করবে না । তাই বিল ভ্রমনে বের হবার আগে আরেকবার করে আবহাওয়া পরিস্থিতি পরখ করে নিন । আজকে আর চলনবিলের দর্শনিয় স্থান নিয়ে আলোচলা করতে পারছিনা । ক্লান্তি এসে পরেছে সামনের পোস্টে আলচনা করে তার লিংঙ্কটি এখানে দিয়ে রাখবো । সবার সুন্দর ভ্রমন প্রত্যাশায় আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি ।

Sunday, October 20, 2013

চলনবিলে প্রযুক্তি শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে নৌকাস্কুল ।

পোস্টটি করতে পেরে আমি নিজেকে আনন্দিতই মনে করছি । এই বিষয়ে একটি পোস্ট ইংরেজীতে করেছি কিন্ত মন মানলনা তাই আবার বাংলাতে করছি । মনেপড়ে সেই দিন গুলির কথা যখন আমারা সবাই নৌকা স্কুলে পড়তাম । দিনগুলির কথা মনে পরলেই এখন আনন্দ অনুভব করি । “নৌকায় স্কুল”  বিষয়টা ভাবতেই কেমন যেন লাগে । আমারা সাধারনত জানি নৌকা দিয়ে মানুষ যাতায়াত কারে পারাপার হয়, কিন্তু নৌকা দিয়ে স্কুল সেটা কিভাবে? নৌকাকে জিনি স্কুলে রূপান্তর করেছেন তিনি হলেন স্থপতি রেজয়ানুল হক । অসাধারন এক প্রতিভার মানুষ । যার প্রতিটা চিন্তা আমাকে অনুপ্রানিত করে । যাইহোক চলেআসি আমার নিজের গল্পে, আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি । তখন আমাদের এলাকাতে নৌকাস্কুল সবে যাত্রা শুরু করেছে । আমরা সবাই বিস্মিত হতাম যথন নৌকাস্কুল আত্রাই নদী দিয়ে যেত । আমরা সবাই ভাবতাম এটা আবার কি?
যাইহোক প্রতিদিন স্কুলে যাই আসি আর আসার সময় দেখি নদীর ঘাটে ওই নৌকা দারানো তখন এ বিষয়ে কিছু ভাবতাম না । মনে হত কোন কারনে দারিয়ে আছে আবার কিছুক্ষন পর চলে যাবে । কিন্তু লক্ষ করি ওই নৌকা নিয়মিতই ওখানে দারায় এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর ছেড়ে যায় । নৌকাগুলো দেখতে ছিল অদ্ভুত যেমন নৌকাগুলোর উপরে একটি ঘড় সেই ঘড়ের উপর আবার ৮-১০ টি সোলার প্যানেল লাগানো, ভেতরে আবার কম্পিউটার এবং লাইব্রেরী(তবে এগুলো নৌকার ভেতর যাবার আগে জানতাম না) যাইহোক একদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় কৌতুহল থেকেই নৌকার কাছে এগিয়ে গেলাম । বাহিরে দারিয়ে ভেতর দিকে একটি উকি দিলাম দেখলাম কয়েকজন মানুষ বসে আছে আর দুই থেকে তিনজন দুইটি কম্পিউটার চালাচ্ছে এবং তাদের কে এক মহিলা মম্পিউটার চালানো শেখাচ্ছে।  কিছুক্ষন দারাতেই শাপলা ম্যাডাম অর্থাৎ সেই কম্পিউটার ট্রেইনার মহিলা বাহিরের দিকে এগিয়ে আসলেন এবং আমাকে জিঙ্গেস করলেন, “তোমার নাম কি?” এবং বললেন “ভেতরে আসো” । আমি একটু অবাক হলাম কারন আমি ওখানকার কিছুই জানতাম না তাহলে কেন আমাকে ভেতরে যেতে বলছে । যাইহোক শংসয় নিয়েই ভেতরে ঢুকলাম । ভেতরে যাবার পর এক ভাই(লাইব্রেরিয়ান) আমাকে বললো সেল্ফ থেকে বই নাও নিয়ে পড় । আমি একটি গল্পের বই নিলাম এবং পড়তে শুরু করলাম । এবং ভাবছিলাম এরা অযথা কেন আমাকে পড়তে বলছে? পড়ছিলাম এবং কম্পিউটার শেখানো দেখছিলাম । সেই সময়ে গ্রাম বাংলায় কম্পিউটার বিষয়টা বলতে গেলে একেবারেই অপরিচিত ছিল । আমি অবাক হচ্ছিলাম কারন একেত কম্পিউটার একেবারেই অপরিচিত তারউপর দেখি কম্পিউটারটি একটি পিচ্ছি বাচ্চা চালাচ্ছে । আমি অবাক এবং বিস্মিত দুটো একসাথেই হচ্ছিলাম কারন বিষয় গুলা আমার কাছে অদ্ভুত লাগছিল । এর মধ্যে ম্যডাম (শাপলা ম্যাডাম) এসে আমাকে বললেন তুমি কালথেকে নিয়মিত আসবে, লাইব্রেরী থেকে বই নেবে এবং কম্পিউটার শিখবে । আমি শুনেতো  ‍পুরা হতবাক । আমি এই নৌকা বিষয়ে কিছু যানিনা এবং আমি এখানকার ছাত্রও না এমনকি আজকে আমি এখানে ভর্তিও হই নাই । তাহলে কিভাবে আমি কাল থেকে এখানে শেখা শুরু করবো । তবে যাইহোক বিষয়টাতে আমি খুবি আনন্দিত হচ্ছিলাম এবং ভেতরে ভেতরে শিহরণ অনুভব করছিলাম যে কালথেকে আমি কম্পিউটার শিখবো? । সত্যিই আশ্চার্য্য লাগছিল সেই মুহুর্তে । আমার মনে আছে সেই রাতে আমার ভাল ঘুম হয়নি । শুধু কম্পিউটার নিয়ে ভেবেছিলাম । তার পর থেকে ওই যে কম্পিউটারের প্রেমে পরলাম এখনো ছাড়তে পারি না এবং ভবিষ্যতেও এটা ছাড়া সম্ভব না । তারপর থেকে আমার শেখা চলতেই থাকলো ক্লাস টেন অবধি । আমাদেরকে শেখাতো এবং মাসে একদিন করে প্রোগ্রামে নিয়ে যেত । প্রোগ্রামটা হল যে দিন বিদেশ থেকে ভিসিটর আসত সেই দিনটাকে  প্রোগ্রাম বলা হত । প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর বিভিন্ন দেশ থেকে ভিসিটর আসতো এবং আমাদেরকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করত তারপর যদি নৌকার কার্যক্রম ভাল লাগতো তাহলে ডোনেট করে চলে যেত । ওদের শেখানোর শিডিউলটা ছিল ঠিক এইরকম সপ্তাহে
তিন দিন নৌকাস্কুল আসতো এবং বাকি তিন দিন অন্য এলাকায় যেত । এক দিনে একটি নৌকা তিনটি ঘাটে শেখাতো প্রথম সকাল ৯ টায় এক ঘাটে তারপরে দুপুর ১১ টায় আরেক ঘাটে এবং দুপুর ১টায় আরেক ঘাটে । প্রতি দিন কম্পিউটার শেখানোর পাশাপাশি শেখানো হত ইন্টারনেট । তখন ইন্টারনেটের স্পিড এতোটাই স্লো ছিল যা বলার মত না । তারপরেও আমাদেরকে শেখাতো ওই স্পিড দিয়েই ।  নৌকায় ৮-১০ টি সোলার প্যানেল ছিল সেই ছোলার দিয়ে ব্যাটারি গুলা চার্জ হত তারপর সেই ব্যাটারি থেকে IPS দিয়ে বিদ্যূৎ উৎপাদন করে কম্পিউটার চালানো হত । নৌকার ভেতরের সেকশন ছিল দুইটি একটি হল কম্পিউটার ট্রেনিং সেকশন এবং আরেকটি হল লাইব্রেরী এবং একেবারে পেছনে থাকতো ইঞ্জিন রুম এবং নৌকাচালকের থাকার রুম । সত্যিই ভেতর টা অসাধারন ছিল । ভেতরে ঢুকলে মনে হত আমি অ্যমেরিকার কোন একটি জায়গাতে বেরাতে এসেছি । আর এই সকল নৌকা গুলো ডিজাইন করেছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি রেজুয়ানুল হক নিজে ।  রেজয়ানিুল হক যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই মহতি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম শীধুলাই স্বর্নিভর সংস্থা আপনাদের আরেকটি বিষয় বলা হয়িনি তা হল এই প্রতিষ্ঠানের যাবতিয় কার্যক্রম সম্পূর্ণ ফ্রি । এরা কোন স্টুডেন্টের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয় না এই প্রযুক্তি শিক্ষা দেবার জন্য । এবং এই অনন্য অবদানের জন্য এই সংস্থা বিভিন্ন অন্তর্জাতিক সম্মাননা ঘড়ে তুলেছেন । তার মধ্য উল্লেখযগ্য হল জতিসংঘ্য থেকে পুরস্কার পাওয়া 2007 সালে । এবং তাদের কাযক্রমের জন্য বি.বি.সি,  সি. এন. এন, আলজাজিরা সহ বলতে গেলে সকল আন্তরজাতিক মিডিয়াতেই তারা ফিচার হয়েছে । এই সংস্থা বর্তমানে শুধু আমাদের জেলা নাটোরেই নয় পাশের জেলা পাবনা এবং সিরাজগঞ্জেও কার্যক্রম শুরু করেছে । শীধুলাই শুধু প্রান্তিক পর্যায়ে প্রযুক্তির আলো ছরিয়েই সিমাবদ্ধ নেই তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে মানুষের মাছে কৃষি বিষয়ক ট্রেনিং এবং নদী ভাংঙ্গন প্রতিরোধ বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তারা যে এলাকাতে এখন বিদ্যৎ পৌছায়নি সেই এলাকার বাচ্চাদের লেখাপরার জন্য চার্জার ল্যাম্প প্রদান করে । নৌকা খেকে ল্যাম্প গুলা নিয়ে যায় চার্জ ফুরিয়ে গেলে আবার নৌকায় নিয়ে এসে চার্জ দিয়ে নিয়ে যায় ।  সত্যিই নৌকা স্কুলের একজন ছাত্র হয়ে আমি নিজেকে গর্বিতই মনে করি । তোমার কার্যক্রম পরিচালনা করে যাও নৌকা স্কুল হাজার হাজার বছর এটাই আমাদের কামনা ।